ব্লাইটেড ওভাম (Blighted Ovum) বা অ্যানএম্ব্রায়োনিক প্রেগন্যান্সি হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে গর্ভধারণের পর ভ্রূণের থলি (Gestational Sac) তৈরি হয়, কিন্তু তার ভেতরে ভ্রূণ (Embryo) গঠন পায় না বা খুব শুরুর দিকেই গঠন বন্ধ হয়ে যায়।
এটি সাধারণত প্রথম ত্রৈমাসিকে (প্রেগন্যান্সির প্রথম ১২ সপ্তাহে) গর্ভপাতের সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলির একটি।
কেন ব্লাইটেড ওভাম হয়?
-
জেনেটিক সমস্যা
-
শুক্রাণু বা ডিম্বাণুর ক্রোমোজোমে অসামঞ্জস্য থাকলে ভ্রূণ সঠিকভাবে গঠিত হয় না।
-
-
অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন
-
নিষিক্ত ডিম্বাণুর কোষ বিভাজন সঠিকভাবে না হলে ভ্রূণের বৃদ্ধি থেমে যায়।
-
-
মাতৃস্বাস্থ্যের জটিলতা
-
হরমোনের অসামঞ্জস্য (যেমন প্রোজেস্টেরনের ঘাটতি)
-
ডায়াবেটিস বা থাইরয়েড রোগ
-
দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ
-
-
জীবনধারাগত কারণ
-
অতিরিক্ত মানসিক চাপ
-
ধূমপান, মাদক বা অ্যালকোহল গ্রহণ
-
বয়স বেশি (৩৫ বছরের বেশি হলে ঝুঁকি বাড়ে)
-
কেন বর্তমানে এর সংখ্যা বাড়ছে?
-
নারীদের গর্ভধারণের গড় বয়স বৃদ্ধি পেয়েছে।
-
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS), থাইরয়েড সমস্যা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ বাড়ছে।
-
স্ট্রেসফুল লাইফস্টাইল, দূষণ, খাদ্যে রাসায়নিক ও হরমোন এর ব্যবহার বৃদ্ধি।
-
আধুনিক সময়ে অনেক নারী নিয়মিত আল্ট্রাসাউন্ড ও চেকআপ করেন, ফলে আগের তুলনায় এখন বেশি শনাক্ত হচ্ছে।
প্রতিকার কী?
সরাসরি চিকিৎসা দিয়ে ব্লাইটেড ওভাম প্রতিরোধ করা যায় না, তবে ঝুঁকি কমানো সম্ভব:
-
গর্ভধারণের আগে স্বাস্থ্য প্রস্তুতি (Preconception Care):
-
ফোলিক এসিড ও ভিটামিন গ্রহণ
-
ডায়াবেটিস ও থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখা
-
ধূমপান, অ্যালকোহল, মাদক পরিহার
-
-
সুস্থ জীবনযাপন:
-
সুষম খাদ্য গ্রহণ
-
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
-
নিয়মিত ব্যায়াম
-
-
চিকিৎসা পরামর্শ:
-
একবার ব্লাইটেড ওভাম হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরের গর্ভধারণ স্বাভাবিক হয়।
-
তবে যদি একাধিকবার হয় (Recurrent Pregnancy Loss), তখন জেনেটিক টেস্ট, হরমোন টেস্ট ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
-
সহজ করে বললে, ব্লাইটেড ওভাম হলো প্রাকৃতিকভাবে ভ্রূণের বিকাশ বন্ধ হয়ে যাওয়া। এটি একধরনের প্রাকৃতিক সিলেকশন, যাতে দুর্বল বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভ্রূণ টিকে থাকে না
No comments:
Post a Comment